আমেরিকাউত্তর কোরিয়ামিসাইল

পারমাণবিক যুদ্ধের ভয়াবহতা

জুলাই, ১৯৪৫ থেকে এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত মোট দুই হাজারবারেরও বেশি পারমাণবিক বোমার বিষ্ফোরণ ঘটানো হয়েছে এবং এগুলোর অর্ধেকের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একাই দায়ী। পিলে চমকে দেয়ার মতো তথ্য হলেও সত্যিকার অর্থেই পারমাণবিক বোমার বিষ্ফোরণের শক্তি পরীক্ষার জন্য এখন পর্যন্ত ৮টি দেশ মোট ২০৫৬ বার পারমাণবিক বিষ্ফোরণ ঘটিয়েছে।

যে ৮টি দেশ বর্তমানে পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী বলে জানা যায় সেগুলো হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন, ভারত, পাকিস্তান এবং উত্তর কোরিয়া। স্টকহোম আন্তর্জাতিক শান্তি গবেষণা সংস্থার হিসাব মতে, ২০১৯ এর জানুয়ারি পর্যন্ত এই ৮টি দেশের অধীনে মোট ১৩ হাজার ৮৬৫টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। অবাক করার বিষয় হলো, এই অস্ত্রগুলোর ৯০ শতাংশই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার দখলে।

ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন

তবে কোনো দেশের কাছে কী পরিমাণ পারমাণবিক অস্ত্র আছে তার সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও, কোন দেশ পরীক্ষার উদ্দেশ্যে কী পরিমাণ পারমাণবিক বিষ্ফোরণ ঘটিয়েছে তা থেকে এর একটি ধারণা পাওয়া যায়। নীচের পরিসংখ্যানটি দেখলেই এর ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা পাবেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার মতো আর কোনো দেশ এখন পর্যন্ত এত বিপুল পরিমাণ পারমাণবিক বিষ্ফোরণ ঘটায়নি। অবশ্য এই সবক’টি বিষ্ফোরণ করা হয়েছে পরীক্ষা এবং পর্যবেক্ষণের স্বার্থে। যুদ্ধে কিংবা কোনো অঞ্চলে হামলার উদ্দেশ্যে এগুলো ব্যবহার করা হয়নি। যুদ্ধের ময়দানে কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে পারমাণবিক বিষ্ফোরণ ঘটায়। আর কোনো দেশ এরকম উদ্দেশ্যে এখন পর্যন্ত পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করেনি।

আবার উপরের পরিসংখ্যানটির দিকে ফিরে যাওয়া যাক। খেয়াল করলে দেখবেন, ভূমির উপরে যতগুলো পারমাণবিক বিষ্ফোরণ এখন পর্যন্ত হয়েছে, ভূমির নীচে বা সমুদ্রের গভীরে হয়েছে তার প্রায় তিন গুণ। এর কারণ হলো, ভূমির উপরে যখন পারমাণবিক বিষ্ফোরন ঘটানো হয়, তখন তা সরাসরি মানব সভ্যতার উপর প্রভাব ফেলে। যদিও বিষ্ফোরণগুলো ঘনবসতি থেকে অনেক দূরে ঘটানো হয়, কিন্তু তবুও পরিবেশে এর তেজস্ক্রিয়তা দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে। সেজন্য অধিকাংশ পারমাণবিক বিষ্ফোরণ ঘটানো হয় সমুদ্রের গভীরে। ভারত, পাকিস্তান এবং উত্তর কোরিয়া তাদের সবক’টি পারমাণবিক বিষ্ফোরণ ঘটিয়েছে সমুদ্র অঞ্চলে। কিন্তু এতেও যে পরিবেশের ক্ষতি হয় না তা কিন্তু না। সমুদ্র হোক আর মরুভূমি- তা তো পৃথিবীর পরিবেশেরই অংশ।

Tags
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Close