অন্যান্য

ডেড সী বা মৃত সাগরের অজানা রহস্য। মৃত সাগরের ইতিহাস

Dead Sea বা মৃত সাগর নামটি শুনলেই আমরা সাধারণত ভয় পেয়ে যাই৷ কিন্তু ডেড সী বা মৃত সাগর মোটেও ভয়ংকর নয় বরং চমৎকার একটি দর্শনীয় স্থান৷ এখানে সাঁতার না জানলেও কেউ পানিতে ডুবে না৷ আবার এখানকার আবহাওয়া চর্মরোগী এবং শ্বাসকষ্টের রোগীর জন্য উপকারী৷ কিন্তু মুসলিমদের ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী এটি একটি অভিশপ্ত জায়গা৷ আবার এর মালিক কে? ইসরায়েল, ফিলিস্তিন নাকি জর্ডান? কেনই বা এখানে মানুষ পানিতে ভাসে? কেনই বা এটার নাম মৃত সাগর? এসব রহস্য জানতে এবং বাংলাদেশ থেকে কিভাবে এখানে ঘুরতে যাবেন তা জানতে ভিডিওটির শেষ পর্যন্ত দেখুন৷

ডেড সি বা মৃত সাগরের অবস্থান ইসরায়েল, ফিলিস্তিন এবং জর্ডান সীমান্তের মাঝামাঝি৷
এর পূর্বে রয়েছে জর্ডান৷ আর পশ্চিমে রয়েছে ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর৷ পশ্চিম তীর বলতে মূলত এই মৃত সাগর এবং জর্ডান নদীর পশ্চিম তীরকেই বুঝানো হয়৷
এর নামের সাথে সাগর শব্দটি থাকলেও এটি কোন সাগর নয়৷ বরং মাঝারি আকৃতির একটি হৃদ৷ লম্বায় এটি ৫০ কিলোমিটার আর প্রস্থে ১৫ কিলোমিটার৷ মোট আয়তন ৬০৫ বর্গ কিলোমিটার৷ হৃদ বা সাগরটির অর্ধেকরও বেশি মালিকানা জর্ডানের৷ আর বাকিটুকু ফিলিস্তিন এবং ইসরায়েলের ভাগে৷

কিন্তু এখানে মানুষ পানিতে ভাসে কিভাবে? ডেড সি বিখ্যাত মুলত, এখানে সাঁতার না কেটেও পানিতে ভেসে থাকার কারনে৷ এর কারন হচ্ছে এখানকার পানিতে রয়েছে প্রচুর লবন৷ পানির ১৪% এখানে লবণ৷ যেখানে সমুদ্রের পানিতে মাত্র ৩.৫% লবণ৷ এতো বেশি লবণ থাকার কারনে এর পানি মানুষের শরীরের চেয়ে ভারী৷ আর এ কারনেই কেউ এখানে পানিতে ডুবে না৷ ফলে কেউ এখানে পানিতে ভেসে ভেসে পত্রিকা পড়ে কেউ আবার মোবাইল ল্যাপটপ নিয়ে ফেইসবুক ইউটিউব চালায়

কিন্তু এর নাম মৃত সাগর কেন? এর কারন অতিরিক্ত লবণের কারনে এখানে কোন প্রাণি বাঁচতে পারে না৷ অর্থাৎ মৃত সাগরে কোন মাছ নেই৷ শুধু মাছ নয়, মৃত সাগরে কোন প্রাণি, গাছপালা, জীবাণু কিছুই নেই৷ তবে ব্যক্টেরিয়া এবং ভাইরাস রয়েছে এখানে৷ সেই সাথে আছে মানুষ৷
মৃত সাগরের পানি চর্মরোগীদের জন্য উপকারী৷ কথিত আছে এখানে গোসল করলে চর্মরোগ থেকে রেহাই পাওয়া যায়৷ এছাড়াও এখানকার আবহাওয়া শরীরের ব্যাথা এবং শ্বাসকষ্টের রোগীর সমস্যা কমায়৷

ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন

তাহলে মুলমানদের কাছে এই সাগর কেন অভিশপ্ত? মুসলিমদের বিশ্বাস অনুযায়ী এই অঞ্চলটি ছিল নবী হযরত লুত এর অঞ্চল সদুম৷ কিন্তু এই সম্প্রদায় সমামিতার মতো পাপাচারে লিপ্ত হওয়া আল্লাহ এই অঞ্চলটিকে ধ্বংস করে দেন৷

বর্তমানে ডেড সি বা মৃত সাগর পৃথিবীর অন্যতম প্রধান পর্যটনকেন্দ্র৷ প্রতি বছর ইসরায়েল এবং জর্ডান প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে এখান থেকে৷ বিশ্বব্যাংকের গবেষণা অনুযায়ী ফিলিস্তিনের জন্য বছরে ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করা সম্ভব এখানকার পর্যটন খাত থেকে৷ কিন্তু ফিলিস্তিনের অস্থিতিশীলতার কারনে তা সম্ভব হচ্ছে না৷ বাংলাদেশিরা জর্ডান হয়ে এই সাগর ঘুরে আসতে পারে৷

প্রিয় দর্শক, বিস্ময়কর এই হৃদটিকে আপনি কিভাবে দেখছেন? এটি কি আজও সৃষ্টিকর্তার অভিশপ্ত স্থান হয়ে আছে নাকি এখন এটা সৃষ্টিকর্তার একটি উপহার হয়ে দাড়িয়েছে?

Tags
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Close