গ্রিসের সামরিকশক্তি। গ্রিসের সামরিক বাহিনীর শক্তি
সভ্যতার সুতিগার বলা হয় গ্রিসকে৷ গ্রিকরা যেমন সবার আগে সভ্যতায় এগিয়ে গিয়েছিল তেমন সামরিক দিকেও সবার আগে তারাই আধুনিক এবং উন্নত হয়েছিল৷ যার কারনে এক সময় অর্ধেক পৃথিবী তাদোর দখলে চলে গিয়েছিল৷ কিন্তু বর্তমানে গ্রিসের সেই শক্তি নেই৷ তারপরও সামরিক দিক থেকে গ্রিস ইউরোপ তথা পৃথিবীর অন্যতম শক্তিধর দেশ৷ গ্রিস ন্যাটোভুক্ত দেশ হলেও সাইপ্রাস ইস্যুতে ন্যাটো অন্য শক্তিধর দেশ তুরস্ক তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ৷ মুলত ন্যাটোর সদস্য দেশগুলোর মধ্যে গ্রিস আর তুরস্কই সবথেকে বড় সামরিক প্রতিপক্ষ৷
আমাদের আজকের ভিডিওটিতে থাকছে আলেকজান্ডার দ্যা গ্রেট, এখিলিস এবং হারকিউলিসের দেশ গ্রিসের সামরিক শক্তির বর্ণনা৷ প্রতিপক্ষ তুরস্কের তুলনা গ্রিসের সামরিক অবস্থা কিরকম তা জানতে পুরো ভিডিওটির শেষ পর্যন্ত দেখুন৷
গ্রিসের সামরিক বাহিনীর নাম হেলেনিক আর্মড ফোর্সেস৷ একইভাবে গ্রিসের সেনাবাহিনীর নাম হেলেনিক আর্মি এবং বিমান ও নৌবাহিনীর নাম যথাক্রমে হেলেনিক এয়ারফোর্স ও হেলেনিক নেভি৷ গ্রিসের মানুষেরা অনেক্ষেত্রে নিজেদেরকে গ্রিক বলার বদলে হেলেনিক বলে৷ ২০২০ সালের গ্লোবাল ফায়াপাওয়ারের র্যাংকিংয়ে গ্রিসের সামরিক অবস্থান ৩৩ নাম্বারের৷ যদিও র্যাংকিংয়ে গ্রিস তুস্কের তুলনায় তিনধাপ পিছনে তারপরও সমারস্ত্র এবং দক্ষতায় তারা তুরস্কের শক্ত প্রতিপক্ষ৷
ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন
বর্তমান গ্রিসের নিয়মিত সামরিক সদস্য সংখ্যা এক লাখের উপরে৷ তবে প্রতিটা পুরুষ নাগরিকেরই সামরিক ট্রেনিং নেওয়া বাধ্যতামূলক হওয়ায় গ্রিসের যুদ্ধে সক্ষম সৈন্য সংখ্যা প্রায় ২১ লাখের মতো৷
তুরস্কের মতো গ্রিসের সেনাবাহিনীরও প্রধান অস্ত্র জার্মানির তৈরী লিওপার্ড টু মেইন ব্যাটল ট্যাংক৷ মোট ৩৫৩টি লিওপার্ড টু ট্যাংক আছে গ্রিসের কাছে৷ জার্মানির কাছে লাইসেন্স নিয়ে অধিকাংস ট্যাংক অবশ্য গ্রিস নিজেই তৈরী করেছে৷ লিওপার্ড টুর পাশাপাশি লিওপার্ড ওয়ান ট্যাংক আছে
পাঁচশোটি এবং আমেরিকার তৈরী প্যাটোন ট্যাংক আছে চারশোটি৷ মোটমাট সাড়ে তেরোশোর উপরে ট্যাংক আছে গ্রিকদের কাছে৷ ট্যাংক ছাড়া অন্যান্য আর্মার্ড ভেহিকল আছে তিন হাজার সাতশোটি৷ এছাড়াও আর্টিলারি আছে একহাজারের উপরে এবং রকেট প্রোজেক্টর্স আছে দেড়শোটি৷
তুরস্কের মতোই গ্রিসের বিমান বাহিনীর মেরুদন্ড হচ্ছে আমেরিকার তৈরী এফ ১৬ ফ্যালকন যুদ্ধ বিমান৷ ১৫৪টি এফ ১৬ আছে গ্রিসের কাছে যেগুলোর মধ্যে ৮৪টি বিমানকে ভাইপার ভার্সনে উন্নিত করা হচ্ছে৷ এছাড়াও ফ্রান্সের তৈরী মিরেইজ 2000 আছে ৪২টি এবং আমেরিকার তৈরী এফ ৪ ফ্যান্টম আছে ৩৪৷
এই তিন ধরনের বিমানই মাল্টিরোল৷ মোটমাট ৫৬৬টি আকাশযান আছে গ্রিকদের কাছে৷ হেলিকপ্টার আছে ২৩১টি৷ যেগুলোর মধ্যে এ্যাপাচিসহ ২৯টি এ্যাটাক হেলিকপ্টার৷ পেগাসাস নামে গ্রিকদের নিজের তৈরী চারটি ড্রোন আছে৷
গ্রিসের হাতে আছে ভুমধ্যসাগরের অন্য শক্তিশালী নৌবাহিনী৷ বিশেষ করে তিনটি গ্লাভকোস ক্লাস সাবমেরিন এবং তিনটি পসেইডন ক্লাস সাবমেরিন সবথেকে শক্তিশালী৷ মোটমাট এগারোটি সাবমেরিন আছে গ্রিসের কাছে৷ গ্রিসের কাছে ১৩টি দুর্ধর্ষ ফ্রিগেইট জাহাজ আছে৷ এদের মধ্যে জার্মানির তৈরী চারটি হাইড্রা ক্লাস এবং নেদারল্যান্ডসের তৈরী ৯টি এলি ক্লাস ফ্রিগেইট জাহাজ৷
এছাড়াও দ্রুত আক্রমনের জন্য ১৯টি মিসাইলবোট এবং ১০টি গানবোট আছে গ্রিকদের কাছে৷
এক সময় গ্রিকরা সামরিক বাহিনী নিয়ে গোটা পৃথিবীতে দাপিয়ে বেড়ালেও এখন আর তাদের সেই গৌরব নেই৷ তারপরও ভুমধ্যসাগরে তারা অন্যতম প্রভাবশালী রাষ্ট্র৷ ১৯৭৪ সালে সাইপ্রাসকে কেন্দ্র করে তুরস্ক আর গ্রিসের মধ্যে যুদ্ধ হয়৷ যুদ্ধের ফলস্বরূপ সাইপ্রাসের উত্তরাংশকে তুর্কি সাইপ্রাস নাম
দিয়ে আলাদা রাষ্ট্র বলে স্বীকৃতি দেয় তুরস্ক৷ যারকারনে গত কয়েক দশক ধরে গ্রিস আর তুরস্কের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা বেড়েই চলছে৷ দর্শক, আপনি কি মনে করেন শরণার্থী ইসু এবং সাইপ্রাসকে কেন্দ্র করে গ্রিস আর তুরস্কের মধ্যে আবারও সামরিক সংঘাট তৈরী হতে পারে? আর সংঘাত তৈরী হলে গ্রিস তুরস্কের বিরুদ্ধে কতটা সফল হতে পারবে?