আজারবাইজানদেশ পরিচিতিমুসলিম বিশ্বসামরিকশক্তি

আজারবাইজানের সামরিশক্তি কতটা।আজারবাইজান দেশ

আজারবাইজান দেশটি আমাদের কাছে খুব একটা পরিচিত নয়৷ তবে সম্প্রতি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট দেশটি খ্রিস্টান সংখ্যাগরিষ্ট আর্মেনিয়ার সাথে বিবাদে জড়িয়ে পরায় আলোচনায় চলে আসছে৷ অবাক করা বিষয় হচ্ছে আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়া দুটো দেশই সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত রাষ্ট্র৷ এমনকি সোভিয়েত আমল থেকেই এই দুই দেশের যুদ্ধ চলছে৷ আমাদের আজকের ভিডিওটিতে আজারবাইজানের সামরিকশক্তি তুলে ধরবো৷ সেই সাথে আর্মেনিয়ার সাথে সংঘাতের কারন এবং কেন তুরস্ক পাকিস্তান ও ইরান আজারবাইজানকে সমর্থন দিচ্ছে সেসব তথ্যও জানাব৷ পাশাপাশি আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়া ইস্যূতে রাশিয়ার ভুমিকা নিয়েও আলোচনা করবো৷

প্রথমেই আসি আজারবাইজানের ভৌগলিক অবস্থানের বর্ণনায়৷ কেননা আজারবাইজানের ভৌগলিক অবস্থান খুবই জটিল এবং বিরোধের প্রধান কারন৷ ককেশাস অঞ্চলে অবস্থিত আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়া দুই দেশই সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল৷ আজারবাইজানের ভুখন্ড দুই টুকরো যার মাঝখানে আর্মেনিয়া অবস্থিত৷ ঠিক যেন ফিস্তিনের পশ্চিম তীর আর গাজার মাঝে ইসরায়েলের মতো৷ techduniyabd আজারবাইজানের পূর্বে রয়েছে কাস্পিয়ান হ্রদ৷ যার মাধ্যমে রাশিয়া ইরান, তুর্কিমিস্তান এবং কাজাখিস্তানের সাথে যোগাযোগ করতে পারে৷ এছাড়াও তুরস্ক, রাশিয়া, ইরান, জর্জিয়া এবং আর্মেনিয়ার সাথে আজারবাইজানের সীমান্ত রয়েছে৷ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট হওয়ায় ইরান, পাকিস্তান এবং তুরস্কের সাথে আজারবাইজানের অত্যান্ত ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে৷

ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন

আজারবাইজানের সামরিক বাহিনীর সক্রিয় সদ্স্য রয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার৷ রিজার্ভে আছে আরও ৩ লাখ৷ আজারবাইজানের সামরিক বাজেট ২.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার৷ সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশটি রাশিয়া, তুরস্ক এবং দক্ষিণ কোরিয়াসহ আরও বিভিন্ন দেশ থেকে অস্ত্র আমদানি করে৷Tech Duniya

বর্তমানে আজারবাইজানের সেনাবাহিনীতে প্রায় ৭শর মতো ট্যাংকের বিশাল বহর আছে৷ ট্যাংক বহরের দিক থেকে আজারবাইজান ইরান কিংবা তুরস্কের থেকেও শক্তিশালী৷ তাদের হাতে রাশিয়ার সবথেকে উন্নত T 90 ট্যাংক আছে ১০০টি৷ সোভিয়েত ইউনিয়নের কাছে উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া T 72 ট্যাংক আছে ৪৭০টি! সম্প্রতি তারা কোরিয়ার কাছে হুন্দাইয়ের তৈরী ৫০টি K2 Black Panther ট্যাংক কিনেছে৷ যা ঐ অঞ্চলে সবথেকে শক্তিশালী ট্যাংকে পরিণত হবে৷ ট্যাংক বহরের দিক থেকে আর্মেনিয়া আজারবাইজানের কাছে শিশুতুল্য৷

আজারবাইজানের সামরিশক্তি

আজারবাইজানের বিমানবাহিনীর সবথেকে শক্তিশালী ফাইটার হচ্ছে রাশিয়ার কাছে কেনা ১২টি মিগ 29.
এছাড়াও মিগ 21 আছে ৫টি এবং সুখেই Su 25 আছে ১২টি৷ আজারবাইজানের কাছে বিপুলসংখ্যক হেলিকপ্টার আছে৷ শুধুমাত্র এ্যাটাক হেলিকপ্টার হিসেবে Mi 35 আছে ১৭ টি! এছাড়াও ৬৫টি Mi 17 আছে, যেগুলোকে গ্রাউন্ড এ্যাটাকে ব্যবহার করা যায়৷ এগুলোর সাথে ৪টি রাশিয়ার তৈরী অত্যাধুনিক Ka 32 আছে৷ tech duniya bangla
আজারবাইজানের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমও হতবাক করার মতো! S 400 এর পূর্বের ভার্সন S 300 আছে দুই ইউনিট৷ পাশাপাশি রাশিয়ান বুক এবং পেচোরা মিসাইল সিস্টেমও আছে৷ এয়ার ডিফেন্স ছাড়াও গ্রাউন্ড এ্যাটাকের জন্য ইসরায়েলের কুখ্যাত লোরা ব্যালস্টিক মিসাইল আছে ৫০টি৷ পাশাপাশি তুরস্কের কাপলান আছে ২০টি লঞ্চার৷
আজারবাইজানের নৌবাহিনী কাস্পিয়ান সাগরে তাদের জলসীমা পাহাড়া দেয়৷ তাদের হাতে সোভিয়েত মিডগেট ক্লাস সাবমেরিন আছে ৪টি৷ আজারবাইজানের হাতে একটিমাত্র পেত্যাক্লাস ফ্রিগেইট আছে৷ তুরস্ক এটাকে মর্ডানাইজ করে উন্নত করেছে৷ তাদের হাতে মিসাইলবোট আছে ১৫টির মতো৷ এছাড়াও নৌবাহিনীতে ৬টি বিমান ও হেলিকপ্টার আছে৷

আজারবাইজানের সাথে আর্মেনিয়ার সংঘর্ষের কারন আর্টসখ রিপাবলিককে নিয়ে৷ অঞ্চলটির প্রকৃত নাম নাগর্নো-কাবাখ৷ আজারবাইজানের মুল ভুখন্ডে অবস্থিত এলাকাটি আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের অংশ বলে স্বীকৃত৷ তবে বিগত ১শ বছর ধরে অঞ্চলটিকে নিজেদের বলে দাবী করছে আর্মেনিয়া৷ কেননা আর্টসখের আদিবাসীরা অধিকাংশই খ্রিস্টান এবং তাদের ভাষাও আর্মেনীয়৷ তবে আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজান সোভিয়েত ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্ত হলে এই বিবাদ কয়েক দশক ধরে বন্ধ থাকে৷ কিন্তু সোভিয়েত আমলের শেষ দিকে ১৯৮৮ সালে আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের মধ্যে ছয় বছরব্যাপী ভয়াবহ যুদ্ধ হয়ে৷ ঐ যুদ্ধে ৬ হাজার আর্মেনিয় খ্রিস্টান এবং ১২ হাজার আজেরি মুসলিম নিহত হয়৷ এই গৃহযুদ্ধ সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনকে ত্বরান্বিত করে৷ বর্তমানে নাগর্ণ কারাবাখ অঞ্চলটি আর্টসাখ রিপালিক নাম নিয়ে স্বীকৃতিহীন রাষ্ট্র হিসেবে গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত হচ্ছে৷ এমনকি তাদের নিজস্ব সেনাবাহিনা ও বিমান বাহিনীও রয়েছে৷

প্রিয় দর্শক, আপনার মতে নাগর্নো কারাবাখে মালিকানা কার হাতে যাওয়া উচিৎ? আজারবাইজান নাকি আর্মেনিয়া? নাকি আর্টসখ রিপাবলিক হিসেবেই স্বাধীন হওয়া উচিৎ? আপনার মতামত কমেন্টে জানান৷

Tags
Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Close